ফ্রিল্যান্সিং কি : –
সহজ ভাষায় বোঝাতে গেলে বলা যায় কোনো কম্পানির বা ব্যক্তির অধীনে না থেকে নিজের সময় সুবিধে মতন মুক্তভাবে কাজ করাকেই ফ্রিল্যান্সিং বলে। যেমন ধরুন আপনি কোনো কম্পানিতে চাকরি করেন না কিন্তু ওই নির্দিষ্ট কম্পানির কোনো নির্দিষ্ট প্রজেক্টে কাজ করবার জন্য আপনি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে Apply করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে নির্দিষ্ট টাকার বিনিময়ে নির্দিষ্ট সময়ে সেই কাজটি করে কম্পানিকে দিতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং কেন করবেন –
বর্তমান বিশ্বে বেকারত্ব এক অন্যতম সমস্যা। তাই পড়াশোনা বা চাকরির চেষ্টার পাশাপাশি ঘরে বসে পার্ট টাইমে সৎভাবে উপার্জনের জন্য ফ্রিল্যান্সিং অত্যন্ত ভালো একটি উপায়।
আপনি যদি নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে পড়াশোনা করে থাকেন সেক্ষেত্রে সেই বিষয়ে চাকরিতে যোগদানের পূর্বে আপনি সেই বিষয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে থাকলে তা যেমন আপনাকে কাজের কনফিডেন্স দেবে তার পাশাপাশি চাকরি পেতে এক্সপিরিয়েন্স হিসেবেও কাজ করবে।
যদি আপনি ইতিমধ্যে কোনো কাজের সাথে যুক্ত থেকে থাকেন সেক্ষেত্রেও অতিরিক্ত আয়ের উৎস হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং কে বেছে নিতেই পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং এ কি কি কাজ করতে হয় –
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, সেটা নির্ভর করবে কম্পানি বা ব্যক্তির প্রয়োজন এবং আপনার স্কিলের ওপর। বর্তমানে সবথেকে চাহিদায় থাকা ফ্রিল্যান্সিং এর কাজগুলি হলো :
➣ গ্রাফিক ডিজাইনিং (Graphics Designing)
➣ ওয়েবসাইট ডেভলপমেন্ট (Web Development)
➣ App ডেভলপমেন্ট (Mobile App Development)
➣ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)
➣ কন্টেন্ট রাইটিং (Content Writing)
➣ ভিডিও এডিটিং (Video Editing)
উপরে উল্লেখ করা কাজগুলি ছাড়াও অনেক ধরনের ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ রয়েছে।
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো –
ফ্রিল্যান্সিং এ পারদর্শী হওয়ার জন্য আপনার নির্দিষ্ট কিছু স্কিল থাকা চাই, কাজ ভালো হলে তবেই কম্পানি গুলো আপনাকে কাজ দেবে। বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ অনলাইনের মাধ্যমেই হয়ে থাকে, তাই আপনাকে সেই সমস্ত স্কিলে পারদর্শী হতে হবে যেগুলির মার্কেট ডিমান্ড রয়েছে।
যদি আপনার এই স্কিলগুলি না জানা থাকে সেক্ষেত্রেও চিন্তার কিছু নেই, আপনি খুব অল্প সময়েই এগুলি শিখে নিয়ে কাজ শুরু করতে পারবেন।
আপনি সাধারণ গুগল বা ইউটিউবে সার্চ করে এই বিষয়গুলি সম্পর্কে ধারণা নিতে পারেন বা খুব অল্প সময়ে প্রফেশনালি এই কাজগুলি আপনি যেকোনো অনলাইন লার্নিং পোর্টাল থেকেও শিখতে পারেন। জনপ্রিয় কিছু অনলাইন লার্নিং পোর্টালের লিঙ্ক নিচে দেওয়া থাকলো, এখানে আপনি খুবই কম খরচে নানান ধরনের প্রফেশনাল স্কিল গুলি ডেভলপ করতে পারবেন ও শেখার পর সার্টিফিকেট পাবেন –
ফ্রিল্যান্সিং কাজ কিভাবে পাবো –
স্কিল ডেভলপ করার পর সবথেকে প্রয়োজন হলো কাজ পাওয়া। আপনি লোকাল বিভিন্ন কম্পানি গুলিতে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ খুঁজে দেখতে পারেন, কিন্তু সবথেকে ভালো উপায় হলো অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলিতে একাউন্ট বানিয়ে নিজেদের সার্ভিস প্রোভাইড করা।
ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলিতে সারা বিশ্বের লোক নিজেদের প্রয়োজন মতন ফ্রিল্যান্সার নিয়োগ করে, এর ফলে আপনার কাজ পাওয়ার সুযোগ অনেকটাই বেড়ে যায়। মনেরাখতে হবে আপনি যত ভালোভাবে সার্ভিসগুলি প্রোভাইড করবেন তার ওপর আপনার রেটিং বা জনপ্রিয়তা নির্ভর করবে। রেটিং ভালো থাকলে বেশি করে কাজ পাবেন আর খারাপ থাকলে পাবেন না।
প্রতিযোগিতা সব ক্ষেত্রেই রয়েছে, তাই যেই বিষয়ে আপনি সত্যি পারদর্শী সেই বিষয়েই কাজ করুন। নিজের স্কিল ঠিকমতন ডেভলপ না করে কাজ করতে গেলে খারাপ রেটিং পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি যা পরবর্তীতে আপনার কাজ না পাওয়ার কারন হতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা কিভাবে পাবো –
সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং করা হয় বিভিন্ন অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলি বিশ্বব্যাপী কাজ করে ফলে সেখানে পেমেন্ট হিসাবে USD ব্যবহার করা হয়। তবে বেশ কয়েকটি বিশ্বব্যাপী পেমেন্ট সিস্টেম রয়েছে যেগুলির মাধ্যমে আপনি আপনার উপার্জেনের টাকা নিজের কারেন্সিতে নিজের ব্যাংক একাউন্টে পায়ে যাবেন।
ফ্রিল্যান্সিং এ একটা প্রজেক্ট এর জন্য $5 থেকে শুরু করে $100 বা তারও বেশি টাকা উপার্জন করা যেতে পারে। টাকার পরিমান নির্ভর করে আপনি কি কাজ করছেন এবং তাতে আপনি কতটা পারদর্শী।আশা করি ফ্রিল্যান্সিং কি এই সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া গেলো। স্কিল ডেভলপমেন্ট ও পেমেন্ট সিস্টেম নিয়ে আপনাদের কিছু প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে আমাদের জানান। খুব শীঘ্রই আমরা এই বিষয়গুলির ওপর নির্দিষ্ট আর্টিকেল প্রকাশ করবো। লেখাটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন ও নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত থাকুন।